কওমী মাদ্রাসা পড়ুয়া একটা ছোট ছেলে, পাশের এলাকায় হাঁটতে হাঁটতে গেল। ঐ এলাকায় একটা মাদ্রাসা ‘জামিয়া সালাফিয়া’ ঐ মাদ্রাসায় প্রবেশ করলো মাদ্রাসার বড় হুজুর ডাক দিয়ে বললো, এই ছেলে! তুমি কোথায় থাক? কোথায় পড়? ||
বালকটি জবাব দিল, হুজুর আমি পাশেরই একটা মাদ্রাসায় পড়ি। ‘জামিয়া হানাফিয়া’ মাদ্রাস||
‘জামিয়া হানাফিয়া’ নাম শুনে ঐ আহলে হাদীসের হুজুর বললোঃ “ও তোমাদের মাদ্রাসায় তো আবার ফিক্বাহ পড়ায়, হাদীস পড়ায় কম। আমার কাছে এসো হাদীস পড়াব
ছেলেটি বললোঃ “হুজুর আসলে আমিও প্রকৃত আহলে হাদীস হতে চাই। তবে আমাকে কেউ প্রকৃত আহলে হাদীস বানায় না আর আমিও নামধারী আহলে হাদীস হব না”
হুজুর বললোঃ “কি বলো? এসো আমিই তোমাকে সত্যিকারের আহলে হাদীস বানাবো।”||
ছেলেটি বললোঃ “সত্যি বানাবেন হুজুর? আমার কিছু মাসআলা রয়েছে। সহীহ হাদীস থেকে এগুলোর সমাধান দিলেই আমি আহলে হাদীস হয়ে যাব”
হুজুর বললোঃ “নিয়ে আস তোমার কি সমস্যা। এখুনি সমাধান করে তোমাকে আহলে হাদীস বানিয়ে দিব” ||
ছেলেটি প্রথমে ইচ্ছাকৃতভাবে এমন মাসআলা জিজ্ঞেস করলো যার সমাধান সহীহ হাদীসের কিতাবে রয়েছে। সে বললো, “হুজুর পানপাত্রে ‘মাছি’ পড়লে তা বের করার হুকুম কি?
সাথে সাথে হুজুর বুখারী, মুসলীম, আরও ৮-১০ টি কিতাব বের করে সহীহ হাদীস দেখালো যে, “পানপাত্রে মাছি পড়লে কি হুকুমঃ
আবু হুরায়রা (রঃ) থেকে বর্ণিত, রাসুল সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যখন তোমাদের কারো কোন খাবারের পাত্রে মাছি পড়ে, তখন তাকে সম্পুর্ণ ডুবিয়ে দিবে, তারপর ফেলে দিবে। কারণ এর এক ডানায় থাকে শিফা, অন্য ডানায় থাকে রোগ- জীবাণু” (সহীহ বুখারীঃ ৫৩৬৬ ; মুসলীম)
বালকটি বললোঃ “মাশাআল্লাহ! এবার মনে হয় আমি সত্যি আহলে হাদীস হতে পারব। হুজুর আমার আরেকটা মাসআলা জানার আছে?”
হুজুর বললোঃ “বলো কি জানতে চাও?”
বালকঃ “হুজুর আমার পানপাত্রে মশা পড়েছে একটা, তাও গায়ের মুক্বাল্লীদ। সে সহীহ হাদীস ছাড়া বের হবেনা। এখন মশার ব্যাপারে সহীহ হাদীসে কি বলে?”
হুজুরঃ “তুমি কি ফিতনাহ করতে এসেছো এখানে? কি বলছো এটা?”
বালকঃ “হুজুর ফিতনাহর কি করলাম? সহীহ হাদীস থেকে মশা বের করার দলীল চাইলাম। মশা সহীহ হাদীস ছাড়া বের হবেনা”
হুজুরঃ জবাব নেই…….!
বালকঃ “হুজুর সমাধান এখানেই শেষ নয়। আরও আছে, আমার পানির বোতলে ‘ভীমরুল’ পড়েছে। সেটা বের করার সহীহ হাদীস কি?”
হুজুরঃ “দেখো ছেলে তুমি ফিতনাহ করোনা।
বালকঃ “কেন আপনিই না বললেন, আমাকে আহলে হাদীস বানাবেন? এখন সহীহ হাদীস থেকে আমার জবাবগুলো দিন?”
এই কারণেই বলেছি, আমাকে কেউ প্রকৃত আহলে হাদীস বানাতে পারেনা। আর আমিও জালিয়াতি মার্কা নামধারী আহলে হাদীস হতে পারব না” _
আমরা ফিক্বাহ মানি তাই আমরা জানি যে, মাছি পড়লে যেই হুকুম, মশা পড়লেও ঐ হুকুম এবং ভীমরুল পড়লেও একই হুকুম। আর যারা লা মাজহাবী তারা মশার মাসআলাও সহীহ হাদীস থেকে দিতে পারবে না
তাই নমরূদের বিশাল সম্রাজ্য যেমন একটা ল্যাংড়া মশাই ধ্বংস করেছিলো আল্লাহর হুকুমে। তেমনি এদের জালিয়াতি ফাঁশ করতেও একটা ল্যাংড়া মশাই যতেষ্ট। আল্লাহ এদের ফিতনাহ থেকে আমাদের হেফাজত করুন | আমিন…..