দেওয়ানবাগী পীরের নাম মাহবুবে খােদা।। ১৯৪৯ সালে ১৪ই ডিসেম্বর ব্রাহ্মণবাড়ীয়ার আশুগঞ্জ থানার বাহাদুরপুর নামক গ্রামে তার জন্ম। তিনি প্রাথমিক স্কুল শিক্ষার পর তালশহর করিমিয়া আলীয়া মাদ্রাসায় লেখাপড়া করেন। (তার পীর এবং শশুর হল ফরিদপুরস্থ চন্দ্রপাড়া দরবারের প্রতিষ্ঠাতা মৃত আবুল ফজল সুলতান আহমদ) বর্তমানে সে ঢাকার অদূরে দেওয়ানবাগ নামক স্থানে একটি এবং ঢাকার আরামবাগে বাবে রহমত (রহমতের দরজা) নামে আরেকটি আস্তানা স্থাপন করেছেন। এই ভন্ড পীর সূফীবাদ ও তরীকত-মারিফাতের ভাওতা দিয়ে মুহাম্মদী ইসলাম নামে এক কুফুরী মতবাদ প্রচার করে চলছে। লক্ষ লক্ষ টাকা ব্যয় করে সারা দেশে দেওয়ালে দেওয়ালে ‘আশেকে রাসূল সম্মেলন’ নামের বিজ্ঞাপন দিয়ে সে তার দরবারে ঈমান ধ্বংসের সম্মেলন সারা বছর অব্যাহত রেখেছে। কুফরী, শিরকী মতবাদে ভরপুর বই-পুস্তক, সাপ্তাহিক, মাসিক পত্রিকা ও বয়ানের ক্যাসেট এবং লিফলেট, হ্যান্ডবিল প্রচার করছে। হাজার হাজার অশিক্ষিত, জেনারেল শিক্ষিত সরলপ্রাণ মুসলমান তার এই কুফুরী, শিরকী মতবাদের ইন্দ্রজালে আটকা পড়ে চিরতরে নিজেদের ঈমান রত্ন হারাতে বসেছে।
দেওয়ানবাগী পীরের দাবিঃ
১. তিনি আল্লাহর তরফ থেকে প্রেরিত প্রতিশ্রুত মহামানব। আল্লাহই তাকে গােটা বিশ্বে খাঁটি মুহাম্মদী ইসলাম প্রচারের দায়িত্ব দিয়ে নূরে মুহাম্মদীর ধারক-বাহক রূপে পাঠিয়েছেন।
২. সে বর্তমান যামানার মােজাদ্দেদ, মহান সংস্কারক শ্রেষ্ঠতম অলীআল্লাহ।
৩ মহাম্মাদী ইসলামের বাইরে সারা বিশে, যে ইসলাম চালু রয়েছে এটা আসল ইসলাম নয়। এজিদী ইসলাম। এজেদী চক্রান্তের ফসল। এজিদের সৈন্যরা নাকি সাহবাদের পরিবারে এক হাজার জারজ সন্তানের জন্ম দিয়েছিল।
৪. কুরআন, কিতাব, হাদীস, তাফসীর পড়ে আল্লাহকে পাওয়া যায় না। একমাত্র মুর্শিদের সাহায্য নিয়ে আধ্যাত্মিক সাধনা করেই আল্লাহকে পাওয়া সম্ভব, এমনকি দুনিয়াতেই আল্লাহকে স্বচক্ষে দেখা যায়।
৫ দেওয়ানবাগী ও তার মুরীদদের মীলাদ-মাহফিলে স্বয়ং আল্লাহ, ফেরেশতা, শেষ নবীসহ সমস্থ নবী-রাসূল ও ওলী-আউলিয়াগণ হাজির হন। সবাই দাঁড়িয়ে মীলাদ পড়েন, কাঠের খাট নূরের খাটে পরিণত হয়।
৬. আল্লাহ, রাসূল (সাঃ) সহ সমগ্র নবী-রাসূল ফেরেশতা এবং দেওয়ানবাগী ও তার মুর্শেদ চন্দ্রপাড়ার মৃত আবুল ফজলের উপস্থিতিতে সমস্ত ওলী-আউলিয়াগণ এক বিশাল ময়দানে সমবেত হয়ে সর্বসম্মতিক্রমে দেওয়ানবাগীকে মুহাম্মদী ইসলামের প্রচারক নির্বাচিত করেন। অতঃপর সবাইকে নিয়ে আল্লাহ এক বিশাল মিছিল বের করেন। আল্লাহ, রাসূল দেওয়ানবাগী ও তার পীর এ চার জনের হাতে চারটি মুহাম্মদী ইসলামের পতাকা। আল্লাহ, দেওয়ানবাগী ও তার পীর এই তিনজন সামনের সারিতে। সমস্ত নবী-রাসূলসহ বাকীরা পিছনে। মিছিলে আল্লাহ নিজেই শ্লোগান দিচ্ছিলেন, মুহাম্মদী ইসলামের আলাে, ঘরে ঘরে জ্বালাে’। (নাউজুবিল্লাহ)।
১. এই অভিশপ্ত শয়তান নাকি স্বপ্নে দেখেছে যে, ঢাকা হতে ফরিদপুর পর্যন্ত বিস্তৃত ফলেফুলে সজ্জিত এক বিশাল মনােরম বাগান। ঐ বাগানে একটি ময়লা-আবর্জনার স্তুপের উপর নবীজির বিবস্ত্র (উলঙ্গ) লাশ অত্যন্ত করুন অবস্থায় পড়ে আছে। দেওয়ানবাগী উক্ত লাশের হাঁটুতে তার হাত লাগানাে মাত্রই ঐ লাশে প্রাণ ফিরে এলাে। সুন্দর পােশাকে সুসজ্জিত ও উজ্জ্বল চেহারা বিশিষ্ট হয়ে গেলেন নবীজি। হাসিমুখে তাকে বললেন, হে ধর্মের পুনর্জীবনদানকারী! আমার ইসলামকে এর আগে আরাে পাঁচ বার জীবিত করা হয়েছিল। (নাউজুবিল্লাহ) (সুত্র: রাসূল কি সত্যিই গরীব ছিলেন?, আল্লাহকে সত্যিই কি দেখা যায় না? ইত্যাদি)
আল্লাহ সম্পর্কে তার কুফুরী আকিদা
১. আল্লাহর সাথে যােগাযােগ আপন কূলবেই হয়ে থাকে। অন্যভাবে হাজার ইবাদত করেও আল্লাহকে পাওয়া যাবে না।
২. আল্লাহ ও রাসূলকে স্বচক্ষে না দেখে কালেমা পড়ে সাক্ষ্য দেওয়ার ও বিশ্বাস করার কোন অর্থ হয় না।
৩. মানুষ ও আল্লাহর সত্তা বা মূল অস্তিত্ব আলাদা নয়; বরং এক প্রত্যেক, মানুষের আত্মা আল্লাহর মূল সত্তার মধ্যে বিলীন ও মিশ্রিত ছিল। প্রত্যেক মানুষের দিলে আল্লাহর মূল সত্তার এক টুকরা নূর আছে।
৪. জিব্রাইল বলিতে অন্য কেহ নন, স্বয়ং হাকিকতে আল্লাহই। যিনি রাসূল তিনিই আল্লাহ। (নাউজুবিল্লাহ)
৫. আল্লাহ নিরাকার নন, তাঁর আকার আকৃতি, হাত-পা, চোখ-কান, জবান সবই আছে।
দেওয়ানবাগী আকিদা-বিশ্বাস নং-১
দেওয়ানবাগী পীরের হজ্জ করার প্রয়ােজন নেই। তার ‘আল্লাহ কোন পথে? বইয়ের ২য় সংস্করণ মে১৯৯৭ইং,১৯২-১৯৩ পৃষ্ঠায় লিখেছে: তার জৈনক ভক্ত আহমদ উল্লাহ যুক্তিবাদী দেওয়ানবাগী সাহেব কেন হজ্জ করেননি এটা চিন্তা করতে করতে ঘুমিয়ে যান। স্বপ্নে দেখেন হযরত ইবরাহীম (আঃ) নির্মিত মক্কার কা’বা ঘর এবং স্বয়ং রাসূল (সাঃ) বাবে রহমতে হাজির হয়েছেন। (বাবে রহমত পবিত্র মদীনার মসজিদের একটি বিখ্যাত দরজার নাম। নবীজীর (সাঃ) রওযা শরীফের সােজা উপরে নির্মিত সবুজ গম্বুজের মত একটি সবুজ গম্বুজও দেওয়ানবাগী তার আরামবাগের আস্থানার উপর নির্মাণ করেছে) রাসূল (সাঃ) তাকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন: তুমি যে ধারণা করতেছ যে, শাহ দেওয়ানবাগী হজ্জ করেননি, আসলে এটা ভুল। আমি স্বয়ং আল্লাহর নবী মুহাম্মদ (সাঃ) তাঁর সাথে আছি এবং সর্বক্ষণ থাকি। আর কা’বা ঘরও তার সম্মুখে উপস্থিত আছে। আমার ‘মুহাম্মাদী ইসলাম শাহ দেওয়ানবাগী প্রচার করতেছেন। তার হজ্জ করার কোন প্রয়ােজন নেই।
তার বিপক্ষে দলিলঃ
দেওয়ানবাগীর এই উক্তি সম্পূর্ণ কুরআন-হাদিস পরিপন্থী। পবিত্র কুরআনে হজ্জ সম্পর্কিত একটি পূর্ণ সূরাই নাযিল হয়েছে। আল্লাহ তাআলা বলেন,
ولله على الناس حج البيت من استطاع اليه سبيلا
অর্থঃ আল্লাহর উদ্দেশ্যে বায়তুল্লাহ শরীফে হজ্জ পালন করা মানুষের উপর অবশ্য কর্তব্য (ফরজ) মানুষের মধ্যে যাদের সেখানে যাওয়ার সামর্থ্য আছে। (সূরা আলে ইমরান, আয়াত: ৯৭) এখানে বলা হয়েছে, মক্কা স্থিত বায়তুল্লাহ শরীফ গিয়ে হজ্জ পালন করার কথা।
সে ফরযিয়াতকে দেওয়ানবাগী অস্বীকার করেন। যা পবিত্র কুরআনের | বিরুদ্ধাচরণকারী। যে ব্যক্তি আল্লাহর বিরুদ্ধাচরণ করে সে তাে মুসলমানই নয়, তার পীর হওয়ার প্রশ্নই উঠে না।
দেওয়ানবাগী আকিদা-বিশ্বাস নং- ২
যিনি রাসূল তিনিই আল্লাহ।।
দেওয়ানবাগ হতে প্রকাশিত আত্মার বাণী ৭ম বর্ষ ৭ম সংখ্যার ১৩নং পৃষ্ঠায়। | দেওয়ানবাগীর কথা লিখেছেন। হাদীসে আছে “মান রায়ানী ফাকাদ রায়াল হক’ মানে যে রাসূলকে দেখেছে সে মূলে আল্লাহ তায়ালাকে দেখেছে। তার ৩ একথা মতে যিনি রাসূল তিনিই আল্লাহ। (বাতিল পীরের পরিচয়, পৃ: ৩১)
তার বিপক্ষে দলিলঃ
হাদীসটি মিশকাত শরীফে এভাবে বর্ণিত হয়েছে।
من رانی قد رای الحق
হাদীসটির সহীহ অর্থ এই, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) ইরশাদ করেন, যে ব্যক্তি আমাকে স্বপ্নে দেখবে সে সত্যিই আমাকে দেখবে, কারণ শয়তান আমার আকার ধারণ করতে পারে না। (মিশকাত, পৃ: ১১১) দেওয়ানবাগীর কথা হল- যে রাসূলকে দেখেছে সে আল্লাহকে দেখেছে অর্থাৎ = রাসূলই আল্লাহ। দেওয়ানবাগীর এই ধারণা ঈমান বিধ্বংসী কুফরী। যে ধারণা | পােষণকারীকে মুসলমান বলা যায় না। কেননা, রাসূল সম্বন্ধে সহীহ ঈমান হল, আল্লাহ তাআলা খালিক (সৃষ্টিকর্তা) রাসূল (সাঃ) মাখলুক ও আল্লাহর বান্দা। আল্লাহর জাত বা সত্তা কারও জাত বা সত্তার মধ্যে মিশ্রিত বা দ্রবীভূত হন না। এবং তাঁর জাত বা সত্তার মধ্যেও কেউ মিশ্রিত বা দ্রবীভূত হয় না। অতএব, খালিক (আল্লাহর) সাথে মাখলুক ‘রাসূল’ এর অভিন্নতা প্রকাশ করা কুফরীর অন্তর্ভূক্ত। যা পরিপূর্ণ কুরআন বিরােধী। কেননা, কুরআনে ঘােষুিত হয়েছে
وما محمدا رسول”
| অর্থঃ মুহাম্মদ (সাঃ) একজন রাসূল বৈ কিছুই নয়। (সূরা আল-ইমরান, আয়াত: ১৪৪),
অর্থঃ মুহাম্মদ (সাঃ) আল্লাহ তাআলার রাসূল। (সূরা ফাতহ, আয়াত: ২৯),,,,
محمد رسول الله ماکان محمد ابا اكبر من رجالکم ولکن رسول الله وخاتم البين
অর্থঃ হে মানবজাতি! মুহাম্মদ (সাঃ) তােমাদের পুরুষদের মধ্যে কারাে পিতা নয়, বরং আল্লাহর রাসূল ও সর্বশেষ নবী। (সূরা আহযাব, আয়াত: ৪০) উল্লিখিত কুরআনের বর্ণনায় নবী করীম (সাঃ) কে আল্লাহর রাসূল বলা হয়েছে। পবিত্র কুরআনে যাকে রাসূল বলা হয়েছে তিনি কখনও আল্লাহ হতে পারেনা। সুতরাং আল্লাহ এবং রাসূলের মধ্যে পার্থক্য এবং বৈপরিত্য রয়েছে
দেওয়ানবাগীর আকিদা-বিশ্বাস নং- ৩
মৃত্যুর পর জীবিত করা হবে না। “আল্লাহ কোন পথে গ্রন্থের” ৫৮নং পৃষ্ঠায় লিখেছে, আর এ আত্মাকে পরিত্যক্ত • দেহে আর কখনও প্রবেশ করানাে হয় না। | দেওয়ানবাগীর মতে মৃত্যুর পর মানুষের দেহ ধ্বংস হয়ে যায়। আর কোন দিন . এ দেহ বানানাে হবে না। রুহ ঢুকায়ে এ দেহকে জীবিত করা হবে না।
তার বিপক্ষে দলিলঃ দেওয়ানবাগীর এ মতবাদ ঈমান বিধ্বংসী কুফুরী। যা সম্পূর্ণ কুরআন-সুন্নাহ পরিপন্থি। কেননা, কুরআনে বলা হয়েছে।
و الموتی يبعثهم الله ثم الي يرجعون
অর্থঃ আর মৃতকে আল্লাহ পুনর্জীবিত করবেন; অতঃপর তার প্রতিই তারা প্রত্যাবর্তিত হবে। (সূরা আনয়াম, আয়াত: ৩৬)
وبعدها علينا اناگا فعلين
অথঃ মৃত্যুর পর তােমাদেরকে পুনর্জীবিত করবাে যাতে তােমরা কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন কর। (সূরা বাকারা, আয়াত: ৫৬)
অর্থঃ যেভাবে আমি প্রথমে সৃষ্টি করছিলাম, সেভাবে পুনরায় (হাশরে) সৃষ্টি করবাে । আমার প্রতিশ্রুতি সত্য। নিশ্চয়ই আমি তা পূর্ণ করবােই। (সূরা আম্বিয়া, আয়াত: ১০৪)
উল্লিখিত কুরআনের বর্ণনা দ্বারা স্পষ্ট হল- মৃত্যুর পর আল্লাহ তাআলা পুনর্জীবিত করবেন। সুতরাং দেওয়ানবাগীর এ মতবাদ ভ্রান্ত ও গােমরাহী। যারা এমন মতবাদ পােষণ করে তারা এ সকল কুরআনের আয়াত অস্বীকারকারী গণ্য হয়ে কাফের হয়ে যাবে।।
দেওয়ানবাগী আকিদা-বিশ্বাস নং- ৪
জান্নাতের অস্তীত্বকে অস্বীকার। আল্লাহ কোন পথে? (৩য় সংস্করণ) বইয়ের ৪০ পৃষ্ঠায় লিখেছে, “প্রভুর সাথে। পুনরায় মিলনে আত্মার যে প্রশান্তি ও আনন্দ লাভ হয় উহাই শ্রেষ্ঠ সুখ। এ মহামিলনের নামই প্রকৃত জান্নাত।
তার বিপক্ষে দলিলঃ
দেওয়ানবাগী এখানে জান্নাতের স্বতন্ত্র অস্তিত্বকে অস্বীকার করেছে এবং জান্নাত বলতে আত্মিক সুখকে বুঝিয়েছে। এতে জান্নাত সম্পর্কিত কুরআনের আয়াত সমূহ এবং হাদীস সমূহকে অস্বীকার করল। আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের আকিদা হল, জান্নাত শব্দের অভিধানিক অর্থউদ্যান, বাগান, সুখময় স্থান ইত্যাদি। ইসলামী পরিভাষায়- পার্থীব ক্ষণস্থায়ী জীবনের অবসানের পর মু’মিনের অনন্ত সুখময়, চিরস্থায়ী জীবনের জন্য মহান আল্লাহ তাআলার যে সুসজ্জিত আবাস প্রস্তুত করে রেখেছেন, তাকে জান্নাত বলে। জান্নাত সম্পর্কে পবিত্র কুরআনে ইরশাদ হয়েছে- ১) ,
ان الذین امنوا الصليخت كانت لهم جنت الفردوس نز. خلدين فيها يبغون عنها حولا.
অর্থঃ যারা ঈমান এনেছে এবং সৎকাজ করেছে তাদের আপ্যায়নের জন্য রয়েছে জান্নাতুল ফিরদাউস। সেথায় তারা চিরস্থায়ী হবে, সেখান হতে তারা। স্থানান্তর কামনা করবে না। (সূরা কাহফ, আয়াত: ১০৭-১০৮)।
জান্নাতের মােট আটটি স্তর রয়েছে
১. জান্নাতুল ফিরদাউস, ২. দারুল মাকান, ৩. দারুল কারার, ৪. দারুস সালাম, ৫. জান্নাতুল মাওয়া, ৬. দারুন নাঈম, ৭. দারুল খুদ, ৮. জান্নাতুল আদন।
إن الذين امنوا وعملوا الصيحتي لهم جي التعيم
অর্থঃ যারা ঈমান আনে ও সৎকর্ম করেন তাদের জন্য আছে নেয়ামতে ভরা জান্নাত। (সূরা লুকমান, আয়াত: ৮) ,
.
.أما الذين آمنوا وعملوا البخت فلهجنت الماوی نزلا بما كانوا يعملون
অর্থঃ যারা ঈমান আনে, সৎকর্ম করে, তাদের কৃত কর্মের ফল স্বরূপ তাদের আপ্যায়নের জন্য জান্নাতুল মাওয়া হবে বাসস্থান। (সূরা সাজদাহ, আয়াত: ১৯) এখানে লক্ষ্যণীয় বিষয় হলাে, দেওয়ানবাগী জান্নাতের যে মনগড়া অর্থ করেছে। তাতে কুরআনে বর্ণিত জান্নাতের স্থরের আয়াত সমূহকে অস্বীকার করে একজন গােমরাহ পীর বলে সাব্যস্থ হল। এহেন স্বভাবের মানুষ পীর হওয়া তাে দূরের কথা, ঈমান আছে কি-না চিন্তা করে দেখুন?
দেওয়ানবাগী আকিদা-বিশ্বাস নং- ৫
মিযান অর্থ দাড়িপাল্লা নয়। ‘আল্লাহ কোন পথে? বইয়ের ৫৬নং পৃষ্ঠায় লিখেছে “মিযান বলতে মানুষের ষড়রিপুমুক্ত পরিশুদ্ধ বিবেককে বুঝায়। মিযান অর্থ দাড়িপাল্লা নয়।” উক্ত বইয়ে আরাে লিখা আছে “উপসংহারে বলা যায় যে, জাগতিক বিচারে যেহেতু বিচারকের কোন দাড়িপাল্লার প্রয়ােজন হয় না, দাড়িপাল্লা দ্বারা বিচার করার বিষয়টি উপমা স্বরূপ ব্যবহার করা হয়েছে।”
তার বিপক্ষে দলিলঃ
এখানে দেওয়ানবাগী মিযানের মূল অর্থঃ দাড়িপাল্লা বাদ দিয়ে মনগড়া অর্থ করে মিযানকে অস্বীকার করল। যে ব্যক্তি কুরআনের মনগড়া অর্থ বা ব্যাখ্যা করবে তার ঠিকানা হবে জাহান্নাম। এ প্রসঙ্গে হাদীসে বর্ণিত আছে,
قال رسول الله غالبة من قال في القران برأيه فليتبواء مقعده من النار وفي رواية من قال في القران بغير علم فليتبوأ مقعده من التار
অর্থঃ নবী করীম (সাঃ) ইরশাদ করেন, যে ব্যক্তি কুরআনের মনগড়া ব্যাখ্যা বলবে সে নিশ্চিতভাবে জাহান্নামে তার ঠিকানা বানিয়ে নিল। অন্য বর্ণনায় আছে, যে ব্যক্তি কুরআনের (মর্ম উদঘাটনের) ব্যাপারে ইলম ছাড়া (মনগড়া) কথা বলল, সে নিশ্চই জাহান্নামে নিজের ঠিকানা বানিয়ে নিল।
| (তিরমিযী, মিশকাত: ৩৫) মিয়ান সম্পর্কে সহীহ আকিদা হল, মিযান শব্দের অর্থ দাড়িপাল্লা। হাশরের ময়দানে মিযান স্থাপন করা হবে। নেক আমল বদ আমলের ওজন করা হবে। মিযান অর্থ যে দাড়িপাল্লা বা তুলাদন্ড তা কুরআনের নিম্নোক্ত আয়াত থেকে প্রমাণিত।
والماء رفعها ووضع الميزان
অথঃ তিনি (আল্লাহ) আকাশকে করেছেন সমুন্নত এবং স্থাপন করেছেন দাড়িপাল্লা ।(সূরা আর-রহমান আয়াত: ৭) ..
موازينه فامهاوية فاما من ثقل موازينه فهو في عيشة الراضية. وأما من
অর্থঃ যখন যার পাল্লা ভারী হবে, সে তাে লাভ করবে সন্তোষজনক জীবন। কিন্তু যার পাল্লা হালকা হবে তার স্থান হবে হাবিয়া’ (জাহান্নাম)। (সূরা কারিয়া আয়াত: ৬-৯)।
– الله الذي انزل الكتب بالحق والميزان
অর্থঃ আল্লাহই অবতীর্ণ করেছেন সত্যসহ কিতাব এবং তুলাদণ্ড। (সূরা শূরা আয়াত: ১৭) সুতরাং ভন্ড দেওয়ানবাগী মিযানের মনগড়া অর্থ করে মিযানের সঠিক অর্থকে অস্বীকার করে উপরােক্ত কুরআনের বর্ণনা অস্বীকারকারী সাব্যস্থ হল।