ভন্ডপীর দেওয়ানবাগীর স্বরুপ উন্মোচনের স্বার্থে তার বলা কিছু কথা, তার অপকর্ম এবং তার সম্পর্কে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ফতোয়া নিচে তুলে ধরা হলো :
১. “‘দেওয়ানবাগী স্বপ্নে দেখেন ঢাকা এবং ফরিদপুরের মধ্যবর্তী স্থানে এক বিশাল বাগানে ময়লার স্তূপের উপর বিবস্ত্র অবস্থায় নবীজীর প্রাণহীন দেহ পড়ে আছে (নাওযুবিল্লাহ)। মাথা দণি দিকে, পা উত্তর দিকে প্রসারিত। বাম পা হাঁটুতে ভাঁজ হয়ে খাড়া আছে। আমি উদ্ধারের জন্য পেরেশান হয়ে গেলাম। তাঁর বাম পায়ের হাঁটুতে আমার ডান হাত দিয়ে স্পর্শ করার সাথে সাথে দেহে প্রাণ ফিরে এল। এবং তিনি আমাকে বললেন, ”হে ধর্মের পুনর্জীবনদানকারী, ইতিপূর্বে আমার ধর্ম পাঁচবার পুনর্জীবন লাভ করেছে।”
( সূত্র: রাসূল কি সত্যিই গরিব ছিলেন-দেওয়ানবাগ থেকে প্রকাশিত )
২. “একদিন ফজরের পর মোরাকাবারত অবস্থায় আমার তন্দ্রা এসে যায়। আমি তখন নিজেকে লুঙ্গি-গেঞ্জি পরিহিত অবস্থায় রওজা শরীফের নিকট দেখতে পাই। দেখি রওজা শরীফের উপর শুকনা পাতা এবং আগাছা জমে প্রায় এক ফুট পুরুহয়ে আছে। আমি আরো ল্য করলাম, রওজা শরীফে শায়িত মহামানবের মাথা মোবারক পূর্ব দিকে এবং মুখমণ্ডল দণি দিকে ফিরানো। এ অবস্থা দেখে আমি আফসোস করতে লাগলাম। এমন সময় পাতার নীচ থেকে উঠে এসে এ মহামানব বসলেন। তার বুক পর্যন্ত পাতার উপর বের হয়ে পড়ে। তিনি আমার দিকে তাকিয়ে বললেন, আপনি দয়া করে আমার রওজা পরিষ্কার করে দেবেন না ? আমি বললাম, জী, দেব। তিনি বললেন, তাহলে দিন না। এভাবে বারবার তিনবার বলায় আমি এক একটা করেপাতা পরিষ্কার করে দেই। এরপর আমার তন্দ্রা ভেঙে যায়।”
( সূত্র: রাসূল কি সত্যিই গরিব ছিলেন-দেওয়ানবাগ থেকে প্রকাশিত )
৩. “দেওয়ানবাগী এবং তার মুরীদদের মাহফিলে স্বয়ং আল্লাহ্, সমস্ত নবী, রাসূল (সা), ফেরেস্তা, দেওয়ানবাগী ও তার মুর্শিদচন্দ্রপাড়ার মৃত আবুল ফজলসহ সমস্ত ওলি আওলিয়া, এক বিশাল ময়দানে সমবেত হয়ে সর্বসম্মতিক্রমে দেওয়ানবাগীকে মোহাম্মাদী ইসলামের প্রচারক নির্বাচিত করা হয়।
অত:পর আল্লাহ সবাইকে নিয়ে একমিছিল বের করে। মোহাম্মাদী ইসলামের চারটি পতাকা চারজনের_ যথাক্রমে আল্লাহ, রাসূল (সা), দেওয়ানবাগী এবং তার পীরের হাতে ছিল। আল্লাহ, দেওয়ানবাগী ও তার পীর প্রথম সারিতে ছিলেন। বাকিরা সবাই পিছনের সারিতে। আল্লাহ নিজেই স্লোগান দিয়েছিলেন_ ”মোহাম্মাদী ইসলামের আলো_ ঘরে ঘরে জ্বালো।”
(সূত্র: সাপ্তাহিক দেওয়ানবাগী পত্রিকা- ১২/০৩/৯৯ )
৪. দেওয়ানবাগীর এক পা-চাটা চাকর বলে (নাম মাওলানা আহমাদুল্লাহ যুক্তিবাদী,)
“আমি স্বপ্নে দেখলাম হযরত ইব্রাহীম (আ) নির্মিত মক্কারকাবা ঘর এবং স্বয়ং রাসূলুল্লাহ (সা) বাবে রহমতে হাজির হয়েছেন। আমাকে উদ্দেশ্য করে নবী করীম (সা) বলছেন_”তুমি যে ধারণা করছ যে, শাহ্ দেওয়ানবাগী হজ্জ করেননি আসলে এটা ভুল। আমি স্বয়ং আল্লাহর নবী মোহাম্মাদ (সা) তার সাথে আছিএবং সর্বণ থাকি। আর কাবা ঘর ও তার সামনে উপস্থিত আছে। আমার মোহাম্মাদী ইসলাম শাহ্দেওয়ানবাগী প্রচার করতেছেন।
আমি যুক্তি খণ্ডনে যাবো না ।শুধু আপনাদের উপর বিষয়গুলো ছেড়ে দিলাম । কতো বড় ভণ্ড হলে এরকম বলতে পারে । একটা কথাও কোরআন হাদীস কিংবা ইজমা কিয়াসের ভিত্তিতে নয় । সব মনগড়া ।
৫) ভণ্ড পীরের কিছু লোমহর্ষক তথ্য :
“তথাকথিত ছুফী সম্রাট দেওয়ানবাগী পীর জাল দলিলের মাধ্যমে জোর পূর্বক কয়েক কোটি টাকার জমি দখল করে নিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন জমির প্রকৃত মালিক আব্দুল গফুর। গত কয়েকমাস আগে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে আয়োজিত এক সাংবাদিক সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি এই অভিযোগ করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন তার ছেলে মহিদুল ইসলাম, শহিদুল ইসলাম, শফিকুল ইসলাম প্রমুখ।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ১৯৮৫ সালে বাংলাদেশ ব্যাংকের পিছনে ১৪২/১ দক্ষিণ কমলাপুরে ৮০ শতাংশ ভূমি ক্রয় করে। জমিটি ক্রয়ের পর থেকেই তথাকথিত পীর দেওয়ানবাগী তার সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে দখলের পাঁয়তারা করে আসছিল। ভন্ডপীর দেওয়ানবাগীর সন্ত্রাসী বাহিনী গত ২০০২ সালে রাতের অন্ধকারে বাড়ির ভাড়াটিয়াদের জোর পূর্বক বেরকরে জমিটি দখল করে নেয়। ভূমি অফিসের কিছু অসাধু অফিসারে সাথে অবৈধ লেনদেন করে তিনি কাগজপত্র তৈরি করেন। জমি দখলের বিরুদ্ধে জজ কোর্টে মামলা করলে কোর্ট গত ২০০৩ সালে স্থগিতাদেশ প্রদান করে। উল্লেখ্য যে দেয়ানবাগীও তার সন্ত্রাসীচক্র উক্ত বাড়িতে বর্তমানে উটের খামার করে। এখন নিয়মিত শতাধিক সন্ত্রাসী সেখানে অবস্থান করে। তার সন্ত্রাসী বাহিনী মামলা উঠিয়ে নেয়ার জন্য নিয়মিত মোবাইলে হুমকি দিয়ে আসছে। এ ব্যাপারে মতিঝিল থানায় একাধিক জিডি করা হয়েছে।
তিনি আরো অভিযোগ করে বলেন, উক্ত জমির উপর আদালতের স্থগিতাদেশ থাকার পরেও গত ১৪ সেপ্টেম্বর তার স্ত্রীকে সমাধি করা হয়। তার পালিত সন্ত্রাসীদের ভয়ে কেউ মুখ খুলতে সাহস পায় না। তিনি মতিঝিল ও আরামবাগ এলাকায় একাধিক বাড়ি দখল করে নিয়েছেন। তাই জমি ফেরত পেতে জমির প্রকৃত মালিক আব্দুল গফুর প্রশাসনের সহায়তা কামনা করেন।” ( দৈনিক সংগ্রাম )
৭ , “আমার অসংখ্য মুরিদান স্বপ্ন ও কাশফের মাধ্যমে আল্লাহর দীদার লাভ করেছে। আমার স্ত্রী হামিদা বেগম ও আমার কন্যা তাহমিনা এ খোদা স্বপ্নের মাধ্যমে আল্লাহকে দাড়ী গোফ বিহীন যুবকের ন্যায় দেখতে পায়।” (নাউযুবিল্লাহ) –সুত্রঃআল্লাহ কোন পথেঃ২৩
৮ , সাংবাদিক সম্মেলনে সে বলে “শুধু আমি নই, আমার স্ত্রী কন্যা সহ লক্ষ্য লক্ষ্য মুরিদানও আল্লাহকে দেখেছেন” –সুত্রঃ সাপ্তাহিক দেওয়ানবাগ।
৯ , “দেওয়ানবাগে আল্লাহ ও সমস্ত নবী রাসূল, ফেরেস্তারা মিছিল করে এবং আল্লাহ নিজে শ্লোগান দেন।” –সুত্রঃ সাপ্তাহিক দেওয়ানবাগ, মার্চ ১৯৯৯ ইং।
১০ , “আমি এক ভিন্নধর্মের লোককে ওজীফা ও আমল বাতলে দিলাম। ক’দিন পর ঐ বিধর্মী স্বপ্নযোগে মদিনায় গেল। নবিজীর হাতে হাত মিলালো। নিজের সর্বাঙ্গে জিকির অনুভব করতে লাগলো। তারপর থেকে ওই বিধর্মী প্রত্যেক কাজেই অন্তরে আল্লাহর নির্দেশ পেয়ে থাকে।” (নাউযুবিল্লাহ) –সুত্রঃ মানতের নির্দেশিকাঃ২৩, সূফী ফাউন্ডেশন, ১৪৭ আরামবাগ, ঢাকা।
১১, “কোন লোক যখন নফসীর মাকামে গিয়ে পৌঁছে, তখন তাঁর আর কোন ইবাদাত লাগেনা।” –আল্লাহ কোন পথে,পৃঃ ৯০
১২ ,“জিব্রাইল বলতে আর কেও নন, স্বয়ং আল্লাহ-ই জিব্রাইল।”–সুত্রঃ মাসিক আত্মার বাণী, ৫ম বর্ষ, ১ম সঙ্খ্যাঃ২১
১৩ , “সূর্যোদয় পর্যন্ত সাহরী খাওয়ার সময়। সুভে সাদেক অর্থ প্রভাতকাল। হুজুরেরা ঘুমানোর জন্য তারাতারি আযান দিয়ে দেয়। আপনি কিন্তু খাওয়া বন্ধ করবেন না। আযান দিয়েছে নামাজের জন্য। খাবার বন্ধের জন্য আযান দেয়া হয়না।” (নাউযুবিল্লাহ) –সুত্রঃ মাসিকআত্মার বাণী, সংখ্যাঃ নভেম্বরঃ ৯৯, পৃঃ ৯
“ ১৪ , মানুষের জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত হায়াতে জিন্দেগী কে পুলসিরাত বলা হয়।” –সুত্রঃ আল্লাহ কোন পথে, তৃতীয় সংস্করনঃ ৬০
১৫ ,“ আল্লাহ থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার ফলে আত্মা এক বিচ্ছেদ যাতনা ভোগ করতে থাকে। প্রভূর পরিচয় নিজের মাঝে না পাওয়া অবস্থায় মৃত্যু হলে সে বেঈমান হয়ে কবরে যাবে। তখন তাঁর আত্মা এমন এক অবস্থায় আটকে পড়ে যে, পুনরায় আল্লাহর সাথে মিলনের পথ খুঁজে পায়না। আর তা আত্তার জন্য কঠিন যন্ত্রনাদায়ক। আত্মার এরূপ চিরস্থায়ী যন্ত্রনাদায়ক অবস্থাকেই জাহান্নাম বা দোযোখ বলা হয়।”(নাউযুবিল্লাহ) –আল্লাহ কোন পথেঃ ৪৪
১৬ ,দেওয়ানবাগী নিজেকে ইমাম মাহদী দাবী করেন। অতঃপর দরুদে মাহদী রচনা করে্ন ।
দরুদে মাহদীঃ (নাউযুবিল্লাহ) “আল্লাহুম্মা ছাল্লী আ’লা সাইয়্যিদিনা মুহাম্মাদিউ ওয়ালা আ’লা ইমাম মাহদী রাহমাতাল্লিল আলামীন ওয়ালিহী ওয়াছাল্লীম। ”
১৭ , ময়লার স্তূপে অর্ধমৃত ও বিবস্ত্র অবস্থায় রাসুল (সাঃ) কে দেখেছি। (নাউযুবিল্লাহ) মীন যালীক
১৮ , দেওয়ানবাগী ১৯৮৯ সালে নাকি একটি ব্যতিক্রমধর্মী স্বপ্ন দেখে ফেলেন। এ স্বপ্ন সম্পর্কে তিনি বলেন,
“ আমি দেখি ঢাকা ও ফরিদপুরের মধ্যবর্তী স্থানজুড়ে এক বিশাল বাগান ফুলে-ফলে সুশোভিত। ওই বাগানে আমি একা একা হেটে বেড়াচ্ছি। হঠাত বাগানের এক স্থানে একটি ময়লার স্তূপ আমার চোখে পড়ে। আমি দেখতে পাই ওই ময়লার স্তূপে রাসুল (সাঃ) এর প্রানহীন দেহ মোবারক পড়ে আছে। তাঁর মাথা মোবারক দক্ষিন দিকে আর পা মোবারক উত্তর দিকে প্রসারিত। বাম পা মোবারক হাটুতে ভাজ হয়ে খারা অবস্থায় রয়েছে। আমি তাকে উদ্ধার করার জন্য পেরেশান হয়ে গেলাম। আমি এগিয়ে গিয়ে তাঁর বাম পায়ের হাটুতে আমার ডান হাত দ্বারা স্পর্শ করলাম। সাথে সাথেই তাঁর দেহ মোবারকে প্রাণ ফিরে এল। তিনি চোখ মেলে আমার দিকে তাকালেন। মূহুর্তের মধ্যেই রাসূল (সাঃ) সুন্দর পোশাকে সুসজ্জিত হয়ে গেলেন। তিনি উঠে বসে হাসি মুখে আমার দিকে তাকিয়ে বললেন, হে ধর্ম পূনর্জীবন দানকারী! ইতমধ্যেই আমার ধর্ম আরও পাঁচবার পূনর্জীবন লাভ করেছে। একথা বলে রাসূল (সাঃ) উঠে দাঁড়িয়ে হেটে হেটে আমার সাথে চলে এলেন। এরপর আমার ঘুম ভেঙে গেল। ” (নাউযুবিল্লাহ)–সুত্রঃ দেওয়ানবাগীর স্বরচিত গ্রন্থ
১৯ , “রাসূল স. সত্যিই কি গরীব ছিলেন?” ১১-১২ প্রকাশকালঃ জুন ১৯৯৯।
ভন্ড দেওয়ানবাগী সম্পর্কে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ফতোয়াঃ
ক. দেওয়ানবাগের পীর নিতান্তই গোমরাহ ও পথভ্রষ্ট।
খ. ধর্মীয় দীক্ষা গ্রহন করাতো দূরের কথা, এর সাহায্য সহযোগিতা করা, সান্নিধ্যে উঠা-বসা বরং তাঁর সাথে কোন রকম সংশ্রব রাখা হারাম।
গ. আর তাঁর অপপ্রচার প্রতিহত করা প্রত্যেক মুসলমানের কর্তব্য।
(১৭৬৭ ইসঃফাঃ সং ও দাওয়াহ/৩/৮৭/ ৫১২২ তাং ৫/৯/৯১ ইং। )
এত কুকর্মের পরেও বিনা বাধায় তাঁর কাজ সে করে চলেছে। সরকারের পক্ষ থেকে কোন রকম বাধার সম্মুখীন না হওয়ায় দিন দিন তাঁর অপশক্তি ক্রমবর্ধমান ভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। একটু খোঁজ নিলে এ রকম আরও হাজার হাজার গাজাখুরী মতবাদ শুনতে পারবেন, যা সেয় প্রতিদিন বিনা দ্বিধায় বলে চলেছেন।
সকল মুসলমানের ঈমানী দায়িত্ব এ সকল ফেৎনা সম্পর্কে তাওহীদ বাদী ঈমানদার মুসলমানকে সজাগ ও সতর্ক করা। তাই ফেইসবুক টুইটারে শেয়ার করে এই ভন্ড সম্পর্কে আপনার আশপাশের মানুষদের সতর্ক হতে সহায়তা করুন।